October 4, 2023, 10:14 am
শরীয়তপুর প্রতিনিধি: সাতার জানতো না বলে গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে বাবা মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়ির পাশের কীর্তিনাশা নদীতে বন্ধুদের নিয়ে নদীতে সাঁতার শিখতে গিয়েছিল আবিদ। বন্ধুরা কিছুক্ষণ আবিদকে সাঁতার শিখিয়ে উপরে উঠিয়ে রেখে নিজেরা একটি বালুবাহী জাহাজের পেছনে ঢেউ খেলতে গিয়েছিল। এরপর গতকাল আর আবিদকে পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২ টার দিকে মাদারীপুরের আড়িয়াল খা নদীর তিনডার মুখ এলাকায় আবিদ হাসানের লাশ পাওয়া গেছে।
আংগারিয়া ওসমানিয়া কওমীয়া মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হাসানের বাবা মফিজুর রহমান শিকদারের স্বপ্ন ছিল ছেলে আবিদ হাসানকে কোরানের হাফেজ বানাবেন। কিন্তু সাঁতার শিখতে পাঠিয়ে ছেলে আবিদকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন বাবা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবিদ হাসান তার বন্ধুদের নিয়ে সাঁতার শিখতে নদীতে গিয়েছিল। এখন বাড়ি ফিরছে লাশ হয়ে। আবিদের মৃত্যুতে তার বন্ধু ও স্বজনরা ভেঙে পড়েছে,এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আবিদের চাচা জানিয়েছেন, আবিদ বন্ধুদের সাথে সাঁতার শিখতে কীর্তিনাশা নদীতে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ সাঁতার শিখিয়ে বন্ধুরা তাকে নদীর পাড়ে রেখে একটি জাহাজের ঢেউয়ে আনন্দ করতে মাঝ নদীতে চলে গিয়েছিল। বন্ধুরা উপরে উঠে এসে আবিদকে দেখতে না পেয়ে মনে করেছিল সে বাড়িতে চলে গিয়েছে। কিন্তু বাড়িতে তাকে না পেয়ে স্বজন ও বন্ধুরা তাকে খোঁজাখুজি করেও আর পায়নি গতকাল। আজ দুপুরে আড়িয়াল খা নদীর তিনডার মুখ এলাকায় আবিদের লাশ পাওয়া গেছে।
আবিদ হাসান শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া দাঁদপুর গ্রামের মফিজুর রহমান শিকদারের ছেলে।
আবিদ হাসানের বাবা মফিজুর রহমান শিকদার বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেকে আমি হাফেজ বানাব। আবিদরে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলাম। অল্প দিনে আবিদ অনেক দূর এগিয়েছিল পড়াশোনায়,গতকাল আমি নিজে আবিদের পরীক্ষা শেষে বাড়ি নিয়ে এসেছি,ও বললো বাবা আমি সাতার শিখবো,আমি ওর বন্ধু ও পাশের বাসার ৩-৪ জন ছেলের সাথে যেতে দেই, আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার ২ মেয়ে ১ ছেলে, আমার আর কিছু রইল না।
আংগারিয়া ওসমানিয়া কওমী মাদ্রাসার মুহতামিম আবু বকর বলেন, আবিদ হাসান গতকাল পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পর নদীতে সাঁতার শিখতে গিয়ে নিঁখোজ ছিল। আজ তার লাশ পাওয়া গেছে। আবিদ শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই ভালো ছাত্র ছিল। অল্প দিনে নূরানী বিভাগের সকল বিষয় আত্মস্থ করেছিল। তার মতো ফুটফুটে একজন শিশু শিক্ষার্থীকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ।
এরপর দুপুর ২টায় শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও মাদারীপুর থেকে আসা ডুবুরি দল অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও আবিদের সন্ধ্যান পায়নি। স্রোতের কারনে লাশটি হয়তো দুরে সরে গিয়েছে এমন ধারণা করা হয়েছিল।
আজও আবিদের সন্ধ্যান চলতে থাকে। নিহতের আত্মীয় স্বজন সকাল থেকেই ট্রলার দিয়ে কীর্তিনাশা থেকে আড়িয়াল খাঁ নদী পর্যন্ত সন্ধ্যান চালালে আড়িয়াল খাঁ নদীর তিন মাথার মুখ থেকে কচুড়ি পানার সাথে ভাসতে থাকা আবিদের মরদেহ উদ্ধার করে।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, আমরা এবিষয়ে কিছুই জানি না। শিশুটির পরিবারের উচিৎ ছিল আমাদের জানানো। ঘটনাটি দুঃখজনক।
Leave a Reply