সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ শনিবার (১ এপ্রিল)। ১৯৪৪ সালের এই দিনে তিনি পুরান ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

আবদুল আজিজ এবং মুন্নি বেগমের কনিষ্ঠ সন্তান মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকার প্রখ্যাত পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি আলহাজ মাজেদ সরদারের মেয়ে ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।

শুরু থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সব আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু মোহাম্মদ হানিফকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন। তাই ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু তার ঢাকা-১২ আসন ছেড়ে দেন এবং মোহাম্মদ হানিফ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

১৯৯৪ সালে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। তারই নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে ‘জনতার মঞ্চ’ গঠিত হয়, যা ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য এক টার্নিং পয়েন্ট। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে দলের বিজয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন মোহাম্মদ হানিফ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এ সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল তৈরি করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক ছোড়া গ্রেনেডে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও মারাত্মক আহত হন তিনি। তার মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্প্লিন্টার ঢুকে পড়ে। দুঃসহ যন্ত্রণা সহ্য করেই মোহাম্মদ হানিফ জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন। ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে সন্ত্রাসবিরোধী এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

মোহাম্মদ হানিফের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র হানিফ স্মৃতি সংসদ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ ইত্যাদি।

মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাবার জন্মবার্ষিকীতে দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন।